ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে তোমাদের জন্য একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে এসেছি, যার শিরোনাম "যতনে রতন মিলে, সারসত্য এই"। এখানে ভাবসম্প্রসারণের মাধ্যমে ভাবনা প্রকাশের অনন্য একটা রূপ তোমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি, তুমি এটি পড়ে ভালো লাগবে এবং পুরোটা মনোযোগ দিয়ে পড়বে।
যতনে রতন মিলে, সারসত্য এই
মূলভাব : জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে যত্ন সহকারে পরিশ্রম করা দরকার। যত্ন বা পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছুই অর্জন করা যায় না।
সম্প্রসারিত ভাব : আমাদের জীবন সংগ্রামে ভরা। নিজের জায়গা ধরে রাখতে হলে কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টা ছাড়া উপায় নেই, না হলে একসময় অস্তিত্বই হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কোনো জাতি বা মানুষ কখনোই সাধনা ও শ্রম ছাড়া বড় হতে পারেনি। ইতিহাসে আমরা দেখি, যারা পরিশ্রমী ও মনোযোগী ছিলেন, তারাই সফলতার শিখরে পৌঁছেছেন এবং অমর কীর্তি গড়েছেন। তাই তারা আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। ‘যত্নে রত্ন মেলে’—এই প্রবাদ যেমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে সত্য, তেমনি জাতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বিশ্বের বহু বিখ্যাত মানুষের জীবনী থেকে আমরা এর প্রমাণ পাই—যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আব্রাহাম লিংকন, টমাস আলভা এডিসন এবং উইলিয়াম শেক্সপিয়র। তাঁরা কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও চেষ্টা দিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আন্তরিক চেষ্টা আর নিয়মিত অনুশীলন থাকলে সাফল্য আসবেই। জীবনে অলসতার কোনো জায়গা নেই। মনে রাখতে হবে, ‘কাজই গতি’। যারা শ্রম এড়িয়ে চলে, তাদের জীবনে সৌভাগ্য আসে না। তাই বলে রাখা ভালো—‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’। শুধু ইচ্ছা করলেই হবে না, সেই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে পরিশ্রম করতে হবে। আজ যে দরিদ্র, সে-ই একদিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারে—এমন উদাহরণ আমাদের চারপাশে অনেক আছে। তাই বলা যায়, ‘যত্ন করলে রত্ন মেলে’—এই কথাটিই চিরন্তন সত্য।
যত্ন ও পরিশ্রম দ্বারাই নিজের ভাগ্যকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। জীবনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাই মানুষকে নিরলস সাধনাকরা দরকার।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
কষ্ট করলেই সাফল্য মেলে। সকলের জীবনেই এ প্রবাদ বাক্যটি একান্ত বাস্তব সত্য। অধ্যবসায় ব্যতীত কিছু অর্জন করা গেছে এ ধরনের নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং নিরলস সাধনাই সাফল্যের চাবিকাঠি। যে সকল ব্যক্তি জীবনে সফল হয়েছেন, মানুষের জন্য অবদান রেখে গেছেন, ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য আদর্শ স্থাপন করে গেছেন, তাঁদের জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তাঁরা সবাই নিরলস প্রচষ্টার মাধ্যমে ঈপ্সিত লক্ষ্যে উপনীত হতে পেরেছেন। বিজ্ঞানী, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, কবি-সহিত্যিক, শিল্পী, সকলেই সাধনার মাধ্যমে সাফল্যের সুফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ নিষ্ঠা ও সাধনার মাধ্যমে বিশ্বকবি হতে পেরেছেন। কামাল আতার্তুকের জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জীবনে বহু বাধা-বিঘ্ন উত্তীর্ণ হয়ে তুরস্কের মানুষের মুক্তিদাতা হতে পেরেছিলেন। ইউরোপের অনেক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী অধ্যবসায় ও সাধনার মাধ্যমে দুনিয়াকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য মূল্যবান চিত্রকর্ম। এতে প্রমাণ মেলে, কঠোর পরিশ্রম ও মনোযোগ ছাড়া কেউই নিজের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারে না। আজ মানুষ এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহে যাচ্ছে, মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এমনকি চাঁদেও পা রেখেছে—এসব কিছু সম্ভব হয়েছে দীর্ঘ সাধনা ও গবেষণার ফলেই। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার আমাদের বিশ্বকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিচ্ছে, চিকিৎসা জগতে এসেছে বিপ্লব—সবকিছুই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানীদের নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার কারণে। তাই বলা যায়, “যতনেই রত্ন মেলে”—অর্থাৎ চেষ্টা করলে, পরিশ্রম করলে তার ফল একদিন ঠিকই পাওয়া যায়।
সমাপ্তি: আশা করি তোমাদের এই ভাবসম্প্রসারণ ভালো লেগেছে। আমাদের সাইট StudyTika.com-এ আরও অনেক সুন্দর ও সহজ ভাবসম্প্রসারণ পাবা। তুমি চাইলে সেখানে গিয়ে আরও ভালো ভালো ভাবসম্প্রসারণ পড়তে পারো। ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য।
একই ভাবসম্প্রসারণ অন্য জায়গা থেকে সংগ্রহ করে দেওয়া হলো