ভাবসম্প্রসারণঃ বিত্ত হতে চিত্ত বড় [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

এই লেখায় “ভাবসম্প্রসারণঃ বিত্ত হতে চিত্ত বড়” নিয়ে সুন্দর একটি ভাবসম্প্রসারণ দেওয়া হয়েছে। এখানে ভাবগুলো সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যাতে আপনি খুব সহজে বুঝতে পারেন। আশা করি, এই ভাবসম্প্রসারণ আপনার পড়ার আনন্দ বাড়াবে এবং ভালো লাগবে।

ভাবসম্প্রসারণঃ বিত্ত হতে চিত্ত বড় [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

বিত্ত হতে চিত্ত বড়

ভাবসম্প্রসারণ: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ তার মূল্যায়ন হয় তার হৃদয় বা চিত্তের মাধ্যমে। শুভ বিবেক, ন্যায়ের বোধ, মনুষ্যত্ব ও কল্যাণচেতনার মাধ্যমেই এই গুণাবলি প্রকাশ পায়। এসব গুণই মানুষকে মহৎ ও মর্যাদাবান করে তোলে। জীবনে টাকার বা সম্পদের প্রয়োজন আছে ঠিকই, কিন্তু ধন-সম্পদ মানুষ হওয়ার মাপকাঠি নয়। যাদের হৃদয় মহৎ, তারা নিজের বিবেক দিয়ে ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বোঝে এবং ধনী হলেও অহংকার করে না বরং বিনয়ী থাকেন। মনুষ্যত্বের আভিজাত্যের কাছে ধনের আভিজাত্য ম্রিয়মাণ হয়ে যায়। কিন্তু জগতে এমন লােকও আছে, বিত্তের অন্ধ মােহ যাদের আপন খেয়ালের তরীতে ভাসায়। নিজেকে নিয়ে মগ্ন থাকতে শেখায়। কিন্তু চিত্ত এর ব্যতিক্রম। চিত্তের বলেই মানুষ মানুষকে ভালােবাসে। বিপুল সম্পদের আভিজাত্যের গর্বে তারা গর্বিত। ভােগসর্বস্ব এসব মানুষ কেবল আত্মসুখে মগ্ন থাকে। কিন্তু এ সুখ প্রকৃত সুখ নয়। কোনাে মানুষের যদি চিত্তের ঔদার্য না থাকে তার যত ধনসম্পদই থাকুক প্রকৃত বিচারে সে কোনাে মানুষই নয়। বিত্ত তাকে বিলাস ও ভােগের অধিকার দিলেও মনুষ্যত্বের মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে পারে না । সমাজ, দেশ ও জাতি তার দ্বারা উপকৃত হয় না। বরং চিত্তহীন বিত্তশালীরা নানাভাবে সমাজকে কলুষিতই করে থাকে। অপরদিকে বিত্তশালী না হয়েও যার সুন্দর ও উদার হৃদয় রয়েছে সে সবার কাছে আদৃত। চিত্তের ঔদার্যে সে মানুষের কল্যাণে ব্রতী হয়। তার পবিত্র হৃদয়ের কল্যাণ স্পর্শের আলােয় আলােকিত হয় অন্য মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র। মনুষ্যত্বের মহিমায় তারা মহিমান্বিত। তাই তাদের সম্মান ও মর্যাদা চিরস্থায়ী— তারা সবার হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে আসীন। ধনসম্পদ ক্ষণস্থায়ী আর শুভ্র বিবেক ও মনুষ্যত্ব চিরস্থায়ী। তাই বলা হয় বিত্তের চেয়ে চিত্ত বড়।

একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন

মূলভাব: ধন থাকলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ যার মন উদার।

সম্প্রসারিত ভাব : মানব জীবনে অর্থ-সম্পদের আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। কিন্তু এ অর্থ-সম্পদ যদি মানব কল্যাণে ব্যয়িত না হয়, তবে এর কোনাে মূল্য নেই। এ জন্য সংকীর্ণমনা ব্যক্তিরা মহা সম্পদশালী হলেও স্মরণীয় বা বরণীয় হতে পারে না। আর্তের সেবা, দুঃখীর দুঃখ মােচন তথা মানব কল্যাণে তাদের অর্থ ব্যয় হয় না বলে সমাজে তাদের সমাদর ক্ষণস্থায়ী। বিত্তের বৈভবে তারা সমাজে সাময়িকভাবে সমাদৃত হলেও মানুষের মনে স্থায়ী আসন করে নিতে পারে না। সংকীর্ণ ও অনুদার মনোভাব মানুষদের নিয়ে সবাই হাসি-তামাশা করে, আর মৃত্যুর কিছুদিন পরই তাদের নাম এ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। এমনকি নিজের লোকেরাও তাদের স্মরণ করে না। কিন্তু মানুষের মন এমন এক শক্তি, যা তাকে খুব উঁচু মর্যাদায় পৌঁছে দিতে পারে। যাদের হৃদয় মানবপ্রেমে ভরা ও মানুষের উপকারে নিবেদিত, তাদের দেখে মানুষের শ্রদ্ধায় মাথা নিজে থেকেই নত হয় এবং অন্তর থেকে ভালোবাসা জেগে ওঠে। যেমন: হযরত মুহাম্মদ (সা.), বেগম রোকেয়া, মাদার তেরেসার মতো অনেকেই আছেন, যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে মৃত্যুর পরও স্মরণীয় ও অনুকরণীয় হয়ে আছেন—তাদের উদার মানসিকতার কারণেই।

মন্তব্য: ধনাঢ্য ব্যক্তির চেয়ে মহৎ হৃদয়ের অধিকারীই প্রকৃত মানুষ।

 আপনি যদি ভাবসম্প্রসারণ ভালোবাসেন তাহলে StudyTika.com-এ আরও অনেক সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে পারেন। নতুন নতুন ভাবসম্প্রসারণের জন্য আমাদের সাইটে ঘুরে আসুন।

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.