ভাবসম্প্রসারণঃ বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

স্বাগতম! এই লেখায় তোমাদের জন্য একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে আসা হয়েছে— “ভাবসম্প্রসারণঃ বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে”। এই ভাবসম্প্রসারণটি খুব সহজ ও মজার ভাষায় লেখা হয়েছে, তাই তুমি মন দিয়ে পড়লে পুরোটা ভালোভাবে বুঝতে পারবে। চল, এখন শুরু করি এবং ভাবসম্প্রসারণটি উপভোগ করি।

বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে

মূলভাব : বিনয় এবং নম্রতা দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়। যারা অহঙ্কারকে বর্জন করতে পারে এবং বিনয়ী হতে পারে তারাই অপরের নিকট থেকে যথার্থ মর্যাদা লাভ করে এবং সুনাম ও সুযশ অর্জন করে।

সম্প্রসারিত ভাব : মানব চরিত্রের বিভিন্ন গুণাবরীর মধ্যে বিনয় একটি বিশেষ গুণ। বিনয় দ্বারাই মানুষ মানুষের মন জয় করে থাকে। বিনয় স্বর্গীয় সুষমা ছড়ায়। আর এর সাহায্যেই মানুষ সম্মানের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। অহঙ্কার মানুষের চরিত্রকে ধ্বংস করে। অহঙ্কারী মানুষ করো কাছে সমাদৃত হয় না। সমাজে অনেক ব্যক্তিকেই ধন, মান কিংবা বংশ গৌরব জাহির করতে দেখা যায়। এটা উচিত না। কারণ এ ধরনের ব্যক্তিরা কারো নিকট হতে সম্মান পায় না, বরং ঘৃণার পাত্র হয়। চরিত্রগুণে যেসব মহান ব্যক্তি পৃথিবীতে অমরতা লাভ করেছেন, তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করলে জানা যায়, তাঁরা সকলেই বিনয়ী ছিলেন। ইসলামের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিনয়ের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করেছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, হাজী মহম্মদ মুহসীন সহ অনেক মনীষী বিনয়ের মূর্ত প্রতীক ছিলেন। বিনয় দিয়েই তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছিলেন। এজন্য আজও বিশ্ববাসী তাঁদের পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করে। এটা সত্য যে, সাধারণ মানুষের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়ে কেউ বড় হতে পারেনি। অহংকারী রাজা-বাদশারা ইতিহাসের পাতায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং মানুষ তাদের নাম ঘৃণায় উচ্চারণ করে।

সম্মান পেতে হলে অপরকে সম্মান করতে হবে। অপরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের সাথে বিবেচনা করা অর্থ নিজের বড় হওয়ার পথকে রুদ্ধ করা।

এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো

মুলভাব : বিনয় বা নম্রতা মানব জীবনকে মহিমান্বিত করে তোলে। গর্ব ও অহঙ্কার বিসর্জিত বিনয়াবনত যে জীবন তা সকলের কাছে বিশেষভাবে সমাদর গাভ করে। এই সমাদরের ফলে মানুষ শ্রদ্ধার সাথে বড় বলে বিবেচিত হয়।

ভাব-সম্প্রসারণ : মানুষের জীবনকে বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত করে বিকশিত করতে হয়। মানবিক গুণাবলি সহযোগেই মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য মানুষকে সাধনা করতে হয় এবং সাধনার ফলে জীবনে মহত্ত্বের যথার্থ বিকাশ ঘটে। মানুষের মহৎ গুণাবলির মধ্যে বিনয় অন্যতম। বিনয় মানব জীবনকে মাধুর্যমণ্ডিত করে তোলে। বিনয় মানুষকে অপরের কাছে শ্রদ্ধান্বিত করে বড় করে। জীবনে অহঙ্কার থাকা মোটেই উচিত নয়। অহঙ্কারকে পতনের মূল বলে বিবেচনা করা হয়। অহঙ্কারী লোক মানুষের কাছে শ্রদ্ধা পায় না। গর্বিত মন যখন অতি উগ্র হয়, তখন সে নিজের ভারসাম্য রাখতে পারে না। গর্ব আর অহঙ্কার মানুষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে এবং সমাজে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য জীবনে সচেতনভাবে অহঙ্কার দূর করে বিনয়ী হতে হবে। বিনয়ী হলে সবাই আপনাকে ভালোবাসে এবং শ্রদ্ধা করে। এভাবেই বিনয়ী মানুষ বড় এবং মর্যাদাশীল হিসেবে গণ্য হয়। গুণী মানুষকে বড় হতে হলে নম্র হতে হয়। নম্রতা ও বিনয়ই মানুষকে মানুষের মনে জায়গা করে দেয় এবং স্মরণীয় করে তোলে। তাই অহংকার না করে বিনয়ী জীবন যাপন করা খুবই প্রয়োজন। যখন মানুষের হৃদয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসন পাওয়া যায়, তখনই জীবনের সার্থকতা আসে। বড় হওয়ার গৌরবের পেছনে থাকে বিনয়ের বড় অবদান। তাই বড় হয়ে মর্যাদা পেতে হলে ছোট বা বিনয়ী হতে হয়।

 আশা করি এই ভাবসম্প্রসারণটি তোমাদের ভালো লেগেছে। আরও অনেক সুন্দর ও সহজ ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে তুমি অবশ্যই StudyTika.com-এ এসে অন্য ভাবসম্প্রসারণগুলোও পড়তে পারো। ভালো লাগলে আবার আসবে!