এই ব্লগপোস্টে রয়েছে একটি সুন্দর ও শিক্ষণীয় ভাবসম্প্রসারণ— “মুকুট পরা কঠিন, কিন্তু মুকুট ত্যাগ আরো কঠিন”। সহজ ভাষায় বোঝানো হয়েছে এর গভীর অর্থ। চলুন পুরো ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে দেখি কী বলা হয়েছে।
মুকুট পরা কঠিন, কিন্তু মুকুট ত্যাগ আরো কঠিন
মূলভাব : ক্ষমতা অর্জন করা কঠিন। কিন্তু ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো আরও কঠিন। রাজমুকুট ক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতীক। কিন্তু লোভী, ক্ষমতালিপ্সু, উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষ রাজকীয় ক্ষমতা দখলের জন্য উন্মাদ হয়ে উঠে। ফলে তার পক্ষে রাজমুকুট ত্যাগ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সম্প্রসারিত ভাব : মুকুট পরা অর্থাৎ, কোন জাতি বা সমাজের কর্ণধার হওয়া সহজ ব্যাপার নয়। বিশেষ গুণের অধিকারী না হলে সে দায়িত্ব কেউ পালন করতে পারে না। কঠোর সাধনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সর্বসাধারণের আস্থাভাজন হতে পারলেই জাতি ও সমাজের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব হতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাদের বহু সাধনা, শক্তি ও সামর্থ্যের প্রয়োজন হয়েছে। আর ক্ষমতায় আসার পর তার দায়িত্ব ও কর্তব্য আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। যতক্ষণ না সব দায়িত্ব পালন শেষ হয়, ততক্ষণ শাসনক্ষমতা ত্যাগ করা উচিত নয়। একজন সত্যিকারের রাজার জন্য রাজমুকুট মানে শুধু সম্মান নয়, এটি এক বিশাল দায়িত্ব। তাকে সবসময় প্রজাদের সুখ-দুঃখের কথা ভাবতে হয় এবং বিলাসিতা ছেড়ে দায়িত্বশীল জীবনযাপন করতে হয়। তাই রাজমুকুট পরা আসলে অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু লোভী মানুষ যখন একবার ক্ষমতায় আসে, তখন তা ছেড়ে দিতে চায় না। তারা ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যায় এবং অন্যায়ভাবে তা ধরে রাখার চেষ্টা করে। ভোগ-বিলাস আর কর্তৃত্ব ত্যাগ করা তাদের পক্ষে সহজ হয় না।
কাজেই মুকুট পরা যেমন শক্ত তেমনি মুকুট পরিত্যাগ আরো কঠিন। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন ব্যাপার, কিন্তু তার চেয়েও কঠিন ক্ষমতা ত্যাগ করা। কারণ ক্ষমতায় গেলে মানুষের দায়িত্ব-কর্তব্য বেড়ে যায়, তাছাড়া ক্ষমতার মোহও ক্ষমতা ছাড়তে বাধা দেয়।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
মূলভাব : একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে ক্ষমতা গ্রহণ করার চেয়ে ক্ষমতা ত্যাগ করা কঠিন।
সম্প্রসারিত ভাব : পূর্বে দেশের রাজা বা শাসকরা মাথায় রাজমুকুট পরতেন, কিন্তু বর্তমানে আর কোনো শাসক মুকুট পরেন না। এখানে ‘মুকুট’ বলতে বোঝানো হয়েছে দেশের শাসনক্ষমতা। একটি দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করা বা শাসনক্ষমতায় আসা খুব সহজ কাজ নয়। যেমন দীর্ঘ সাধনা ও কঠোর পরিশ্রমের পর সিদ্ধি লাভ হয়, ঠিক তেমনি নানা গুণ, যোগ্যতা ও জনগণের প্রতি নিষ্ঠা এবং সেবা প্রদর্শনের মাধ্যমে তবেই কেউ শাসনক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
আপনি যদি ভাবসম্প্রসারণ শিখতে চান সহজভাবে, তাহলে আমাদের সাইটে আরও ভাবসম্প্রসারণ রয়েছে। ভিজিট করুন StudyTika.com—আরও ভাবসম্প্রসারণ পড়ুন এবং শিখুন সহজ বাংলায়।