ভাবসম্প্রসারণঃ মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

“মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন”—এই সুন্দর ভাবসম্প্রসারণটি নিয়ে এখানে সহজভাবে লেখা হয়েছে। যারা স্কুল বা পরীক্ষার জন্য ভাবসম্প্রসারণ খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী হবে। পুরোটা পড়লে অনেক উপকার পাবেন।

ভাবসম্প্রসারণঃ মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

 মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন

মূলভাব : যে কোনো কাজের সাফল্যের জন্যে একেবারে উঠেপড়ে লাগতে হয়, অন্যথা সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যারা জান-প্রাণ বাজি রেখে কর্মে প্রবৃত্ত হয়, সাফল্য কেবল তাদের হাতে ধরা দেয়।

সম্প্রসারিত ভাব : পৃথিবীর খুব কম কাজেই সহজ-সাফল্য আসে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একনিষ্ঠ চেষ্টা-সাধনার দ্বারা সাফল্যকে অর্জন করে নিতে হয়। এছাড়া যে কোনো কাজের পেছনেই নানা বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা থাকে। আবার মানুষের জীবনও পুষ্পশয্যা নয়। এখানে রয়েছে নানা প্রাকৃতিক, মনুষ্যসৃষ্ট ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঝঞ্ঝাট। মানুষকে এসব ঝঞ্ঝাট মোকাবেলা করেই জীবনে টিকে থাকতে হয়। আবার যে কোনো কাজের সাফল্যলাভ এবং ভালো কিছু অর্জনের জন্যে মানুষকে এসব ঝঞ্ঝাট ও বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করতে হয়। কিন্তু জীবনের এসব প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করা ততো সহজ নয়। এজন্যে প্রয়োজন দৃঢ় প্রত্যয়, সাহস, ধৈর্য আর অক্লান্ত পরিশ্রম। জীবনে সফল হতে হলে "Do or die"—এই অটল নীতিতে বিশ্বাস রেখে এগিয়ে চলাই একমাত্র পথ। যারা হার মানে না, বারবার পড়ে আবার উঠে দাঁড়ায়, তারাই একদিন সফলতার চূড়ায় পৌঁছায়। আর যারা সামান্য প্রতিকূলতায় ভেঙে পড়ে, তারা জীবনের মূল স্রোত থেকে ছিটকে পড়ে ব্যর্থতার অতলে ডুবে যায়। প্রকৃতিতে আমরা দেখি, ক্ষুদ্র প্রাণী পিঁপড়া বা মাকড়সাও অবিচল নিষ্ঠা আর চেষ্টা দিয়ে টিকে থাকে। তাদের জীবনসংগ্রামে দৃঢ় মনোভাবই মানুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে ওঠে। স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুস যুদ্ধক্ষেত্রে ছয়বার পরাজয়ের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু একটি মাকড়সাকে বহুবার পড়ে গিয়েও জাল বোনার চেষ্টা করতে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন। এরপর তিনি আবার যুদ্ধ শুরু করেন এবং সপ্তমবারে জয়লাভ করেন—রাজা এডওয়ার্ডকে পরাজিত করে। একইভাবে, নেপোলিয়ন বোনাপার্ট—এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়েও, নিজের আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায়ের বলেই হয়ে উঠেছিলেন ইতিহাসের অমর সম্রাট। তাঁর জীবনও প্রমাণ করে, আত্মপ্রত্যয়, পরিশ্রম ও লক্ষ্যচ্যুত না হওয়াই হলো সাফল্যের চাবিকাঠি।

মন্তব্য : পৃথিবীতে যুগে যুগে, দেশে দেশে আত্মপ্রত্যয়ী, সচেষ্ট ও পরিশ্রমী মানুষেরই জয় হয়েছে। তাই দোদুল্যমানতা, ভয়, উদ্বেগ প্রভৃতিকে পরিহার করে শক্তি, সাহস আর আত্মপ্রত্যয় নিয়ে আমাদের সম্মুখে অগ্রসর হতে হবে।

এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো

মূলভাব : জীবনের লক্ষ্য অর্জনে নিজেকে উৎসর্গ করেই মানুষ সার্থকতা লাভ করে।

সম্প্রসারিত ভাব : জীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত থাকে একটি মহৎ লক্ষ্য অর্জনের মধ্যেই। আদর্শের সাধনাই হওয়া উচিত মানুষের প্রধান কর্তব্য। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই যদি সেই মহৎ লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হয়, তবেই তা অর্থবহ হয়ে ওঠে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়েই জীবনের সাধনা সফল হয়। সফলতাই মানুষের জীবনের প্রধান লক্ষ্য, আর সে সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন হয় জীবনপণ নিষ্ঠা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা। প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটি নির্দিষ্ট আদর্শ থাকা প্রয়োজন, যা তার পথচলার দিশা হয়ে ওঠে। আদর্শবিহীন জীবন ঠিক যেন হালহীন নৌকার মতো—যা দিকহীন, দুর্বল এবং বিভ্রান্তিকর। তাই জীবনের একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা অপরিহার্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দৃঢ় সংকল্পে এগিয়ে যেতে হবে। এই সাধনার পথে যদি একসময় সফলতা আসে, তাহলেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা প্রমাণিত হবে। লক্ষ্যহীন জীবন আসলে নিরর্থক, যে জীবনে নেই কোনো গন্তব্য বা সম্মান। তাই একজন সচেতন ও উদ্যোগী মানুষের সর্বপ্রথম দায়িত্বই হলো জীবনের লক্ষ্য স্থির করে তা অর্জনে সাধনা করা। এই সাধনায় প্রয়োজন দৃঢ় মনোবল, আন্তরিক চেষ্টা এবং অবিচল নিষ্ঠা। জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে মহৎ আদর্শে—এই চেতনাই মানুষকে মর্যাদার উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। তাই জীবনপণ সাধনার মধ্য দিয়েই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা অর্জিত হয়।

মন্তব্য : জীবন বাজি রেখে কোনো কাজে অবতীর্ণ হলে সফলতা আসবেই। ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে এ ধরনের সফলতার অজস্র নজির বিশ্বের ইতিহাসে রয়েছে।

আপনি যদি আরও ভাবসম্প্রসারণ খুঁজে থাকেন, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে ঘুরে দেখুন। StudyTika.com-এ আরও অনেক সহজ এবং পরীক্ষার উপযোগী ভাবসম্প্রসারণ পোস্ট করা হয়েছে। দেখে নিতে ভুলবেন না!

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.