অক্ষরেখা কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | অক্ষরেখার বৈশিষ্ট্য

 পৃথিবীকে ঠিকভাবে বুঝতে হলে কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা খুব দরকার। তার মধ্যে “অক্ষরেখা” একটি খুবই সাধারণ, কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকেই বইয়ে দেখে নামটা চিনে ফেলেন, কিন্তু আসলে অক্ষরেখা কী, কেন এটা এত গুরুত্বপূর্ণ—এসব জানার আগ্রহ থেকেই আপনি এখানে এসেছেন। এই পোস্টে খুব সহজ ভাষায় এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেন ছোট-বড় সবাই সহজেই বুঝতে পারে। ধীরে ধীরে পড়লে পুরো বিষয়টা আপনার কাছে একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই আর দেরি না করে চলুন, সহজ ভাষায় বিষয়টি জানতে শুরু করি।

অক্ষরেখা কাকে বলে?(সহজ সংজ্ঞা)

অক্ষরেখা কাকে বলে?

পৃথিবীর মাঝ বরাবর বিস্তৃত নিরক্ষরেখার উভয় দিকে পরস্পরের সমান্তরালে বিস্তৃত কাল্পনিক রেখা গুলিকে অক্ষরেখা বলে।

অথবা, ভূ-পৃষ্ঠের যেসব স্থানের অক্ষাংশ সমান বা একই সেই সব স্থানকে যুক্ত করলে যে রেখা পাওয়া যায় তাকে অক্ষরেখা বলে।

আরো বিস্তারিত বললে, অক্ষরেখা হলো পৃথিবীর নিরক্ষরেখার উপরে ও নিচে পূর্ব-পশ্চিম দিক বরাবর ১° অন্তর কল্পনা করা মোট ৯০টি সমান্তরাল রেখা। প্রতিটি রেখা নিরক্ষরেখার মতো পূর্ণ বৃত্ত এবং পৃথিবীর মানচিত্র বুঝতে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অক্ষরেখার বৈশিষ্ট্য

১. পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত

সব অক্ষরেখা পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে বিস্তৃত থাকে।

২. সবগুলোই পূর্ণ বৃত্ত

প্রত্যেকটি অক্ষরেখা একটি সম্পূর্ণ বৃত্ত তৈরি করে।

৩. নিরক্ষরেখার সমান্তরাল

প্রতিটি অক্ষরেখা নিরক্ষরেখার সমান্তরালে থাকে, তাই একই অক্ষরেখায় থাকা সকল স্থানের নিরক্ষরেখা থেকে দূরত্ব সমান।

৪. দূরত্বে ভিন্নতা

নিরক্ষীয় অঞ্চলে অক্ষরেখাগুলির দূরত্ব তুলনামূলক কম হলেও মেরুর দিকে গেলে এই দূরত্ব কিছুটা বৃদ্ধি পায়।

৫. সবচেয়ে বড় পরিধি নিরক্ষরেখার

অক্ষরেখাগুলোর মধ্যে নিরক্ষরেখার পরিধি সবচেয়ে বড়, কারণ এটি পৃথিবীর মাঝ বরাবর অবস্থান করে।

৬. মেরুর দিকে ছোট হতে থাকে

অক্ষরেখার পরিধি নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে যেতে যেতে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে দুই মেরুতে গিয়ে বিন্দুতে পরিণত হয়।

৭. সর্বত্র সমান নয়

সব অক্ষরেখার পরিধি এক নয়; নিরক্ষরেখা সবচেয়ে বড় আর মেরুর দিকে সবচেয়ে ছোট।

৮. একই অক্ষাংশ

একই অক্ষরেখায় অবস্থিত সব স্থানের অক্ষাংশ একই থাকে।

৯. স্থানীয় সময়ের ভিন্নতা

একই অক্ষরেখায় থাকা বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় সময় ভিন্ন হতে পারে।

১০. দিন-রাত্রি ও জলবায়ু প্রায় একই

একই অক্ষরেখায় থাকা এলাকার জলবায়ু এবং দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সাধারণত খুব কাছাকাছি হয়।

অক্ষরেখার বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে

১) একই অক্ষরেখায় অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় সময় বিভিন্ন হয়।
২) একই অক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য এবং জলবায়ু প্রায় একই রকম ভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
৩) অক্ষরেখা গুলির দৈর্ঘ্য নিরক্ষরেখা থেকে উভয় মেরুদ্বয়ের দিকে ক্রমশ ছোট হতে হতে দুই মেরুতে দুটি বিন্দুতে পরিণত হয়।
৪) অক্ষরেখা গুলির পরিধি সর্বত্র সমান নয়।
৫) অক্ষরেখা গুলি পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রসারিত হয়।
৬) অক্ষরেখার সর্বনিম্ন মান 0° এবং সর্বোচ্চ মান 90° 
৭) একই অক্ষরেখা উপর অবস্থিত বিভিন্ন স্থানের অক্ষাংশ সমান হয়।
৮) অক্ষরেখার সাহায্যে কোন স্থান পৃথিবীর কতটা উত্তর বা দক্ষিণে রয়েছে তা জানা যায়।
৯) পৃথিবীর মাঝ বরাবর অবস্থিত নিরক্ষরেখা হল সর্ববৃহৎ ও প্রধান অক্ষরেখা।
১০) প্রত্যেকটি অক্ষরেখা নিরক্ষরেখার সাপেক্ষে ও পরস্পর সমান্তরাল হয়। এইজন্য একই অক্ষরেখায় অবস্থিত কোন স্থানের দূরত্ব নিরক্ষরেখা থেকে সর্বদা সমান হয়।
১১) মেরু অঞ্চলে অক্ষরেখা গুলির পারস্পরিক দূরত্ব নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পায়।
১২) অক্ষরেখা গুলি হল কাল্পনিক পূর্ণবৃত্ত।

মহাবৃত্ত কী?

পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে পৃথিবীর মাঝ বরাবর বিস্তৃত নিরক্ষরেখার পরিধি সবচেয়ে লম্বা। এজন্য নিরক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত বলা হয়।

আশা করছি সহজ ভাষায় লেখা এই ব্যাখ্যা পড়ে অক্ষরেখা সম্পর্কে আপনার বুঝ আরও পরিষ্কার হয়েছে। পৃথিবীর মানচিত্র বোঝা হোক বা সাধারণ জ্ঞান—অক্ষরেখা জানাটা সত্যিই খুব কাজে লাগে। যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই আরও ভালো ভালো শিক্ষামূলক পোস্ট পড়তে ভিজিট করুন StudyTika.com। এখানে প্রতিদিনই নতুন ও সহজভাবে লেখা শেখার মতো অনেক তথ্য পাওয়া যায়। ধন্যবাদ, পাশে থাকার জন্য।

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.